প্রতিষ্ঠা ইতিহাস
শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষাথীদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে “শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশন” যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যান মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক নিবন্ধিত যার নিবন্ধন নম্বর ঢ-০৯৯১৩, তারিখ- ১৪-১২-২০২১।
উল্লেখ্য শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৯ সালের শেষ ভাগে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক ছিলেন মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। তিনি ১-ডিসেম্বর-১৯৬৯ থেকে ১১-জুন-১৯৭৬ সাল পর্যন্ত প্রধান বিদ্যালয়ের শিক্ষকের দ্বায়িত্ব পালন করেন। বিদ্যালয়ের প্রথম এস এস সি ব্যাচ উত্তীর্ণ হয় ১৯৭২ সালে। সেই ব্যাচে ২২ জন শিক্ষার্থী এস এস সি পাশ করেন। তাঁদের মধ্যে স্বনামধন্য ও একাধিক কৃতি ব্যক্তিত্ব রয়েছেন। সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। এছাড়াও প্রথম ব্যাচে একাধিক মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানি ছিলেন। সাব সেক্টর কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মারুফ আহমেদ টুকু, মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসনাত সিপু, মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান রতন তাঁদের মধ্যে অন্যতম।
মূলত প্রাক্তন ছাত্রদের সংগঠন তৈরির উদ্দ্যোগ নেয়া হয় ১৯৮৯ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে। সে সময়কার প্রধান শিক্ষক ছিলেন মিসেস বেগম লুৎফা। ১৯৮৯ সালে ১৯৮৫ ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্র মোহাম্মদ মাসুদ খান ১৯৭২ থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত ১৮টি ব্যাচের অধিকাংশ ব্যাচ নিয়ে শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র ফোরাম গঠন করার উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯৭৭ ব্যাচের ডাঃ খন্দকার শফিকুল ইসলাম মুকুল কে আহবায়ক এবং তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মিসেস বেগম লুৎফা (আপাকে) প্রধান উপদেষ্টা করে একটি আহবায়ক কমিটিও গঠন করা হয়। সেই আহবায়ক কমিটিতে আরো ছিলেন ১৯৭৮ ব্যাচের স ম সালামতউল্লাহ লোনো, ১৯৮০ ব্যাচের আহসান কবির (রহমান), শক্তি পদ দাস, মুনির উদ্দিন আহমেদ, ১৯৮৩ ব্যাচের মাহমুদ হাসান কনক, ১৯৮৫ ব্যাচের মোহাম্মদ মাসুদ খান, ১৯৮৮ ব্যাচের মোহাম্মদ আশরাফ উল ইসলাম, এ কে আজাদ প্রমুখ। তিন-চার বছর সেই কমিটির কার্যক্রম চললেও তা চুড়ান্ত আলোর মুখ দেখেনি।
১৯৯৪ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়ের ২৫ বছর পূর্তি (রজত জয়ন্তী) অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানটি বিদ্যালয়ের নিজস্ব উদ্দ্যোগে অনুষ্ঠিত হলেও প্রাক্তন ছাত্রদের একটি বড় ভূমিকা ছিলো। ১৯৭৩ ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্র শাহ আলম রজত জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারন সম্পাদকের দ্বায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৪ সালের ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বর ছিলো দুই দিন ব্যাপী রজত জয়ন্তী অনুষ্ঠানটি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ব্যরিষ্টার জমিরউদ্দিন সরকার। রজত জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের বিভিন্ন কমিটি ও উপকমিটিতে ১৯৭২ ব্যাচের আবুল হাসনাত সিপু, ১৯৭৪ ব্যাচের ড. রেজাউল জলিল, ১৯৭৬ ব্যাচের মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, ১৯৭৭ ব্যাচের ডাঃ খন্দকার শফিকুল ইসলাম মুকুল, ১৯৮৩ ব্যাচের নাফিস খান, ১৯৮৫ ব্যাচের মোহাম্মদ মাসুদ খান, ১৯৮৭ ব্যাচের শওকত হায়দার প্রমুখ প্রাক্তন ছাত্রগণ দ্বায়িত্ব পালন করেন।
২০০৩ সালে ১৯৮৪, ৮৫ ও ৮৬ ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্রদের নিয়ে গঠিত হয় শেরেবাংলা নগর এক্স-টাই (SET)। SET এর উদ্দ্যোগে ২০০৫ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ৩টি ব্যাচ নিয়ে একাধিক ইফতার মাহফিল ও বনভোজন অনুষ্ঠিত হয়।
২০১০ সালে ২০০৮ ব্যাচের সাহস মোস্তাফিজ ২টি ব্যাচ নিয়ে গঠন করে EX SHER E BANGLA NAGAR GOVT. BOYS' STUDENT ASSOCIATION (EX-SBA) যা ২০১১ সাল পর্যন্ত কাজ করে।
২০১১ ডিসেম্বর মাসে ২০০৮ ব্যাচের নাফি, মিশাল, শাহরিয়ার, মিরাজ, সানমুল সহ কয়েকজন প্রাক্তন ছাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে “পুণমির্লনী ২০১২” এর ব্যানারে একটি গ্রুপ তৈরী করে। তাদের আহবানে সাড়া দিয়ে ২০১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর ১৯৮৫ ব্যাচের মোহাম্মদ মাসুদ খান ও ১৯৮৬ ব্যাচের সফিউল কিরন আইডিবি ভবনের সম্মুখে তাদের সাথে মিলিত হয়। পরে ২৩ ডিসেম্বর, ২০১১ শুক্রবার বিকেলে মোহাম্মদ মাসুদ খানের উদ্দ্যোগে বিদ্যালয়ের দোতলায় এক সভা আহবান করা হয়। সেই সভায় ১৯৮৪, ৮৫, ৮৬, ৮৮, ৯০, ৯১, ৯২, ২০০০, ২০০৬, ২০০৭ ও ২০০৮ সহ ১৩-১৪ টি ব্যাচের প্রায় অর্ধশতাধিক প্রাক্তন ছাত্র উপস্থিত হন। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন ১৯৮৪ ব্যাচের মফিজ আহমেদ।
২৭, জানুয়ারী ২০১২ তে আইডিবি ক্যাফেটেরিয়ায় মোহাম্মদ মাসুদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ১ম পুণমির্লনী আয়োজনের লক্ষ্যে গঠিত আহবায়ক কমিটিতে আজিজুর রহমানকে আহবায়ক এবং মোহাম্মদ মাসুদ খানকে সদস্য সচিব করা হয়। অর্থ সম্পাদক করা হয় এস এম রুহুল আমিন রিপনকে।
মুলত পুণমির্লনী ২০১২ সাংগঠনিক কমিটির উদ্দ্যোগে ২০১৩ সালের ১১ জানুয়ারী ৪০টি ব্যাচের ৭ শতাধিক প্রাক্তন ছাত্রের অংশগ্রহনে একটি সফল পুণমির্লনী আয়োজন করতে সমর্থ হয়েছিলো।
প্রাক্তন ছাত্রদের উদ্দ্যোগে ১ম পুনর্মিলনী আয়োজনে ১৯৭২ ব্যাচের মুক্তিযোদ্ধা মারুফ আহমেদ টুকু, আবুল হাসনাত শিপু, ১৯৭৩ ব্যাচের শাহ আলম, ১৯৭৪ ব্যাচের এস এম পারভেজ, শাদুল মোস্তফা, ড. রেজাউল জলিল, ১৯৭৫ ব্যাচের ডাঃ কাজী গোলাম রুসূল, ১৯৭৬ ব্যাচের প্রকৌশলী মামুন হায়দার, মতিউর রহমান জসিম, ১৯৮০ ব্যাচের মেজর (অবঃ) মাহফুজুর রহমান (বেলাল), উইং কমান্ডার হাসান মাসুদ (লিটন), আহসাব কবীর (রহমান), ১৯৮২ ব্যাচের নাজমুল হাসান খান (পলাশ), ১৯৮৩ ব্যাচের নাফিস খান, ১৯৮৪ ব্যাচের মাহবুব রহিম উদয়, গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অবঃ) জাকির হাসান প্রমুখ প্রাক্তন ভাইদের দিক নির্দেশনা ছাড়াও ১৯৮৫ ব্যাচের রুহুল আমিন রিপন, আবুল মনসুর রতন, জাহিদ, ১৯৮৮ ব্যাচের আশারাফ উল ইসরাম, এ কে আজাদ, ১৯৮৯ ব্যাচের মিজান, ১৯৯১ ব্যাচের মুহাম্মদ শাহজামান, ১৯৯২ ব্যাচের মুহাম্মদ রকিব উল ইসলাম (মানিক) প্রমুখ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
২০১৯ সালের সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রস্তুতি শুরু হয় ২২, মার্চ/২০১৯ তারিখে বার্ষিক দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে। মোহাম্মদ মাসুদ খানের সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিেেল প্রায় ২৫টি ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্র অংশগ্রহন করেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষকগণ দোয়া মাহফিলে শরীক হন। প্রধান শিক্ষক মোঃ শফিকুর রহমান, প্রাক্তন শিক্ষক আব্দুর জাহের, আবুল বাশার প্রমুখ এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৯৭৬ ব্যাচের মতিউর রহমান জসিম, ১৯৭৮ ব্যাচের স ম সালামত উল্লাহ লোনো, ১৯৮০ ব্যাচের মেজর মাহফুজুর রহমান বেলাল অবঃ), ১৯৮২ ব্যাচের ফিরোজ, ১৯৮৩ ব্যাচের নাফিস খান।
তবে নিবন্ধিত শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের যাত্রা শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে, ১০৩৯ পূর্ব শেওড়াপাড়া ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় প্রথম সভা। পরবর্তীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যান মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদফতর থেকে নিবন্ধন লাভ করে। যার নিবন্ধন নম্বর ঢ-০৯৯১৩, তারিখ- ১৪-১২-২০২১।